নিজস্ব প্রতিবেদক :: রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদ করিম উরফে মো. সাহেদ। কভিড-১৯ পরীক্ষা নিয়ে মহাজালিয়াতির অন্যতম হোতা সাহেদের করোনা জালিয়াতি প্রকাশের পর আস্তে আস্তে আরো নানা দুর্নীতির মুখোশ উন্মোচিত হচ্ছে। শুধু এমএলএম কিংবা করোনা জালিয়াতি নয়, প্রধানমন্ত্রীর পিএস পরিচয় দিয়ে সম্প্রতি পদ্মা সেতুতে পাথর সাপ্লাই দেওয়ার কথা বলে অনেককে পথে বসিয়েছেন সাহেদ। সিলেটে তিন পাথর ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পাথর নিয়ে দিয়েছেন চেক। সেই চেক বাউন্স হওয়ায় সিলেটের আদালতে মামলাও হয়েছে প্রতারক সাহেদের নামে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর থেকে সাহেদ পদ্মা সেতুতে পাথর সরবরাহ করার কথা বলে বড় ধরনের টার্গেটে নামেন। প্রধানমন্ত্রীর পিএস পরিচয় দিয়ে ওয়ার্ক অর্ডার দিয়ে প্রথমে বাজার দরের চেয়ে বেশি মূল্যে পাথর কিনে ধুন্ধুমার কান্ডে বিমোহিত করে ফেলেন পাথর ব্যবসায়ীদের। ভুক্তভোগীরা রিজেন্ট হাসপাতালের অফিসে এসে বিভিন্ন প্রভাবশালীর সঙ্গে সাহেদের ছবি দেখে বিশ্বাস খুঁজে পেতেন। পাথর ব্যবসায়ীরা একের পর এক পাথর পাঠাতে থাকেন সাহেদের ঠিকানায়। ওই পাথরই বাজার মূল্যের চেয়ে কমে বিক্রি করে দিতেন সাহেদ। তবে কিছু দিন পার হওয়ার পরই তাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। একের পর এক চেক বাউন্স হতে থাকে।
ভুক্তভোগীদেরই একজন সিলেটের জৈন্তা এলাকার মাওলা স্টোন ক্রাশারের মালিক হাজী শামসুল মাওলা। তিনি বলেন, ‘ভাই, আমাদের সে (সাহেদ) পরিচয় দিছে প্রধানমন্ত্রীর পিএস। তার অফিসেও আমি দেখছি প্রধানমন্ত্রীসহ অনেক মন্ত্রীর সঙ্গে তার ছবি। তার কথা বিশ্বাস না কইরা উপায় আছে? ৩০ লাখ টাকার পাথর আমি পাঠায়া দেই। তবে তার (সাহেদ) প্রতিটা চেক বাউন্স হয়। পরে উত্তরা থানায় জিডি এবং সিলেট আদালতে আমি মামলা করি।‘
তিনি আরো জানান, ‘আমার মতো সিলেটের আমিন এবং আকদ্দসও সাহেদের প্রতারণার শিকার। সাহেদের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে পারভেজ ও নাসির যোগাযোগ করত।’
প্রসঙ্গত, গত সোমবার রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরওয়ার আলম। এর পরেই বেরিয়ে আসতে থাকে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন থলের বিড়াল। এখন পর্যন্ত সাহেদের বিরুদ্ধে চলতি বছরের জানুয়ারিতে হওয়া তিনটি মামলার সন্ধান পেয়েছেন তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা।
সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন
সিলেটবিবিসি২৪/ ১২ জুলাই ২০২০/ এমকে-এম