নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় শ্রমিক নেতা ইকবাল হোসেন রিপন খুনের ঘটনায় ১৩ জনের নাম উল্লেখপূর্বক ২০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই সাথে সড়কে চলা অবরোধ প্রত্যাহার করেছেন শ্রমিকরা। শনিবার (১১ জুলাই) দুপুর ২ টায় অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়। এ ঘটনায় নোমান ও সাদ্দাম নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার দুপুরে নিহত সিলেট জেলা ট্রাক ও ট্যাঙ্ক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন রিপনের স্ত্রী ফারজানা আকতার তমা বাদী হয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন- দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল।
মামলার আসামিরা হলো- বরইকান্দি ১ নং রোডের মৃত ফরিদের ছেলে ইজাজুল (২৮), মৃত ফারুক মিয়ার ছেলে রিমু (২৮), মৃত আব্দুল করিম মনজ্জিরের ছেলে মুহিবুর রহমান মুন্না (৩০), মৃত আসদ্দর আলীর ছেলে মোস্তফা (৪০), মৃত বশির মিয়ার ছেলে মিন্টু (৩৮), লিলু মিয়ার ছেলে সেবুল (২৩), চান মিয়ার ছেলে কাইয়ুম (২৮), ফারুক মিয়ার ছেলে বদরুল (২৮), মৃত ফরিদ মিয়ার ছেলে ইসমাইল (৩০), স্থানীয় সাঙ্গু গ্রামের মৃত করিব মিয়ার ছেলে নোমান (৩৯), রেলওয়ে আইডব্লিউ শাখার আকবর হোসেন মজুমদার (৪৮), সিলেট রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মতিন ভুঁইয়া (৫৫) ও ওয়ার্কার সুপারভাইজার শহিদুল হক (৫৮)।
এদিকে এ ঘটনায় নোমান ও সাদ্দাম নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানিয়েছেন দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় নোমান ও সাদ্দাম নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। শ্রমিকরা অবরোধ প্রত্যাহার করে সড়ক ছেড়ে দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে হত্যাকারিদেরে গ্রেপ্তারের দাবিতে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০ টা থেকে শনিবার (১১ জুলাই) দুপুর দেড় টায় পর্যন্ত দক্ষিণ সুরমার বাবনা পয়েন্ট, মহাসড়কের চন্ডিপুল, হুমায়ুন রশীদ চত্বর, পারাইরচক পয়েন্ট অবরোধ করে রাখেন শ্রমিকরা। পরে দক্ষিণ সুরমাস্থ ট্যাঙ্ক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে এক বৈঠকে বসেছেন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও রাজনৈতিক নেতাসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের অনুরোধে অবরোধ তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে রাতে হঠাৎ করে অবরোধ করে রাখায় ঢাকা থেকে সিলেট আসার পথে সকল গাড়ি আটকা পড়ে। এতে সিলেটের ওসমানীনগর পর্যন্ত গাড়ির দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন জনসাধারণ।
শনিবার দুপুরে সরেজমিনে দক্ষিণ সুরমার চন্ডিপুল, পারাইরচক পয়েন্ট ও বাবনা পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায় সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে অবরোধ করে রেখেছেন ট্যাঙ্ক লরি শ্রমিকরা। এসময় ট্রায়ার জালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতেও দেখা যায়। অবরোধের কারণে কোন গাড়ি মহাসড়ক দিয়ে শহরে প্রবেশ করতে কিংবা শহর থেকে মহাসড়ক দিয়ে বের হতে পারেনি। ফলে উভয় পাশে অপেক্ষমাণ গাড়ির সারি দেখা যায়। বিশেষ করে সিলেট শহরে প্রবেশের জন্য অপেক্ষমাণ গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা যায়।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১০ জুলাই) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে দক্ষিণ সুরমার কদমতলী এলাকার বাবনা পয়েন্টস্থ সিতারা হোটেলের সামনে দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন রিপন ও তার সাথে থাকা শ্রমিক নেতা বাবলা আহমদ তালুকদার। পরে তাদেরকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ইকবাল হোসেন রিপনের মৃত্যু হয়।
নিহত ইকবাল হোসেন রিপন দক্ষিণ সুরমার খোজার খলা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে এবং আহত বাবলা আহমদ তালুকদার একই গ্রামের মৃত মোক্তার আহমদ তালুকদারের ছেলে।
সিলেটবিবিসি / ১১ জুলাই ২০ / – –