নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারের রাজা ম্যানশনকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবন’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) বিকালে রাজা ম্যানশনের সামনে “ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ এবং এই ভবনে বসবাস করা নিরাপদ নয়।” এমন নোটিশ টাঙ্গিয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক)। এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবন আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ভাঙার নির্দেশ দিয়েছেন সিসিক মেয়ের আরিফুল হক চৌধূরী। এসময় ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবন খালি করে দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে ব্যবসায়ীদের।
এ বিষয়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, নগরীর রাজা ম্যানশন ঝুঁকিপূর্ণ ভবন। তাই সিসিকের পক্ষ থেকে এটাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এবং ব্যবসায়ীদের মার্কেট খালি করে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘বিশেষজ্ঞ টিমের মাধ্যমে নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো ভেঙে ফেলার জন্য মালিক পক্ষকে নোটিশও দেওয়া হয়েছে।’
কাছাকাছি কয়েকটি ভূগর্ভস্থ বিচ্যুতি বা ফল্ট লাইন থাকায় প্রচণ্ড ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে সিলেট। সাম্প্রতিক ঘনঘন কয়েকটি ভূমিকম্পের কারণে বেড়েছে নগরবাসীর আতঙ্কও। ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর বিরুদ্ধে অভিযানে নামে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। তার অংশ হিসেবেই এসব ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হয়।
তবে সিটি কর্পোরেশন সংশ্লিষ্ট অনেকেই জানিয়েছেন, কেবল রাজা ম্যানশনই নয়, নগরীতে আরো ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদের তালিকা করে নোটিশ দেওয়া হবে। এদের মধ্যে শপিং মল, অ্যাপার্টমেন্ট, হোটেলও রয়েছে। যদিও এসব বহুতল ভবনের বেশিরভাগেরই নির্মাণ অনুমোদন নেই।
সূত্র জানায়, সিটি কর্পোরেশন এবং ফায়ায় সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কাছ থেকে নকশা অনুমোদন না করিয়ে এবং মাটির পরীক্ষা ছাড়াই অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে এসব বহুতল ভবন। এছাড়া প্রায় শতাধিক ভবন রয়েছে যেগুলো নির্মাণ করা হয়েছে দীর্ঘদিন আগে। এসব ভবন এখন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অনেক স্থানে ফাটল ধরা এসব ভবনে ঝুঁকি নিয়েই চলছে বসবাস। এসব ঝুঁকিপূর্ণ বহুতল ভবনের ব্যাপারে এত দিন অনেকটাই উদাসীন ছিল সিলেট সিটি কর্পোরেশন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সিলেট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. কোবাদ আলী সরকার বলেন, সিটি কর্পোরেশন থেকে নকশা অনুমোদনের আগে ভবন মালিককে ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র নিতে হয়। কিন্তু তা অনুসরণ করা হয়নি। সিলেট ফায়ার সার্ভিসের কাছে নগরীর প্রায় ২০০ বহুতল ভবনের তালিকা রয়েছে। ‘এসব ভবনের প্রায় অর্ধেকই নির্মাণ হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক অনুমোদন না নিয়েই’।
সিলেটবিবিসি / ১৪ জুলাই ২০/ – –