নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের বন্দরবাজারে পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে নিহত রায়হান হত্যায় অভিযুক্ত এসআই আকবরকে পুলিশের জন্য লজ্জা বলে অভিহিত করেছেন পররষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. একে আব্দুল মোমেন। তাকে পুলিশ বাহিনী বাচানোর কোন চেষ্টা করছে না উল্লেখ করে জানান, এরকম দু’একজন কুলাঙ্গারের কারণে পুলিশ বাহিনীও লজ্জ্বিত। পুলিশের কেউ তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে না বরং সুষ্ঠ তদন্ত চলছে।
আজ মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর আখালিয়ায় রায়হান আহমদের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের শান্তনা দেন। এসময় রায়হান হত্যার ন্যায়বিচারেরও আশ্বাস দেন তিনি।তিনি রায়হানের পরিবারের সদস্যদের হাতে মোমেন ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ২ লাখ টাকার চেক তুলে দেন।
এসময় সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আকবর যেখানেই থাকুক তাকে ফিরিয়ে আনা হবে।মন্ত্রী বলেন, আমার বিশ্বাস আকবর এখনও দেশের বাইরে যায়নি। কারণ সীমান্তগুলোকে আমরা সাথে সাথে সতর্ক করে দিয়েছি। তবে আকবর বিদেশে পালিয়ে গেলেও তাকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর আগে সিলেটের রাজন হত্যার আসামিকে সৌদি আরব থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিলো।
উল্লেখ্য; গত ১০ অক্টোবর বিকেলে রায়হানকে ধরে নিয়ে আসে বন্দরবাজার থানা পুলিশ। ওই দিন রাতে ফাঁড়িতে তার ওপর নির্যাতন চালায় পুলিশ এবং তাকে ছেড়ে দিতে টাকা দাবি করে। ভোরে অপরিচিত একটি মোবাইল থেকে রায়হানের ফোন পায় তার পরিবার। তাতে ফাঁড়ি থেকে তাকে ছেড়ে দিতে টাকা দাবি করা হচ্ছে বলে জানান রায়হান।পরিবারের কাউকে টাকা নিয়ে এসে তাকে উদ্ধারের অনুরোধও করেন রায়হান। ভোরে তারা টাকা নিয়ে ওই ফাঁড়িতে গেলে জানানো হয় রায়হান এখন ঘুমাচ্ছে, সকাল ১০টার দিকে আসতে হবে।পরে সকাল ১০টার দিকে গেলে তাকে বলা হয় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তার ছেলে মারা গেছেন। এরপর মৃত ছেলের শরীরে নির্যাতনের ভয়াবহ চিহ্ন দেখতে পান তিনি। রায়হানের হাতের নখগুলো উপড়ানো ছিল।
পুলিশ দাবি করে, রায়হানকে ছিনতাইকারী সন্দেহ করে জনতা গণপিটুনি দেয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। তবে সিটি করপোরেশনের ফুটেজে এর কোনো প্রমাণ মেলেনি। পরদিন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। বিকেল ৩টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এশার নামাজের পর জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক করবস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় সিলেট কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেছেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি। মামলার পর এর তদন্তভার দেয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।
সিলেটবিবিসি২৪ডটকম/২০ অক্টোবর ২০২০/এমকে-এম