সিলেটবিবিসি ডেস্ক :: হেফাজত ইসলামের আমীর মাওলানা শাহ আহমদ শফীর উত্তরসুরী কে? সেটা হয়তো জানা যেতে পারে আজই। বুধবার (১৭ জুন) বসতে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী হাটহাজারী দারুল উলুম মাদ্রাসার শুরা কমিটির বৈঠক। শুরা কমিটির বৈঠকে কি নিয়ে আলোচনা হবে এ বিষয়ে কিছু জানা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে আজ শুরা সদস্যদের বৈঠকে অন্য আলোচনার সাথে সাথে মাদ্রাসার মহাপরিচালক পদে নতুন কাউকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
ঐতিহ্যবাহী হাটহাজারী দারুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দিন রুহী শুরা কমিটির বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হবে এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। তিনি জানান, সুনির্দিষ্ট কয়েকটি এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হবে। ওই এজেন্ডাগুলো শুধু শুরা কমিটির সদস্যরা বলতে পারবেন।
তবে মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, বর্তমান মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী বয়সজনিত নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। সম্প্রতি কয়েক মাস ধরে তার শরীর খুব একটা ভালো নয়। এরইমধ্যে চট্টগ্রাম ও ঢাকার বেশ কয়েকটা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। সর্বশেষ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে এক সপ্তাহ কাটিয়ে শারীরিকভাবে খানিকটা সুস্থ বোধ করায় গত সোমবার (১৫ জুন) মাদ্রাসায় ফিরেছেন তিনি।
তবে তিনি যখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তখন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ঘোষণা করায় জটিলতা তৈরি হয়। এ সময় একটি পক্ষ মাদ্রাসার বর্তমান পরিচালনা কমিটির সহযোগী পরিচালক বাবুনগরীকে ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হিসেবে ঘোষণা দেন। এর বিরোধিতা করে আরেকটি পক্ষ ওই পদে তাদের পছন্দের লোককে বসানোর পাঁয়তারা করছে। ফলে মাদ্রাসার পরিচালকের পদ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। এটি নিয়ে দুই পক্ষ পরস্পর মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এড়াতে আল্লামা আহমদ শাহ শফী আগামীকালের বৈঠকটি আহ্বান করেছেন বলেই মনে করেছেন অনেকে। আবার বাইরে থেকে অনেকের আশঙ্কা, আল্লামা শফীর উত্তরসূরি নির্বাচন নিয়ে সেখানে সহিংসতারও সৃষ্টি হতে পারে।
মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মূলত দ্বন্দ্বটা মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীর অনুসারী ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ছেলে হেফাজতে ইসলামের প্রচার সম্পাদক আনাস মাদানীর মধ্যে। জুনায়েদ বাবুনগরীর অনুসারীরা চাইছেন তাকে মহাপরিচালক হিসেবে নিযুক্ত করা হোক। কিন্তু আনাস মাদানী এর বিরোধিতা করছেন। তিনি চাইছেন তার বাবার পর মাদ্রাসার মহাপরিচালক পদে তার পছন্দের কেউ বসুক। এই নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে মাদ্রাসায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। একপক্ষ অন্য পক্ষের বিরোধিতা করে আসছে।